আমের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা
আম হচ্ছে বাংলাদেশের অন্যতম প্রিয় ফল, এবং আম কে ফলের রাজা ও বলা হয় যার মিষ্টি স্বাদ এবং পুষ্টিগুণের জন্য এটি পরিচিত।
এশিয়া থেকে উৎপত্তি হওয়া এই ফলটি এখন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে জনপ্রিয়। আম শুধুমাত্র স্বাদে নয়, এর স্বাস্থ্যগুণ এবং পুষ্টিমানেও অসাধারণ। আসুন জেনে নিই আমের পুষ্টিগুণ এবং উপকারিতা ;
পুষ্টিগুণ:
আমে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, খনিজ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। একটি মধ্যম আকারের আমে সাধারণত নিম্নলিখিত পুষ্টি উপাদানগুলি পাওয়া যায়:
- ভিটামিন সি: দৈনিক প্রয়োজনের প্রায় 67%।
- ভিটামিন এ: প্রয়োজনীয় ভিটামিন এ-এর প্রায় 10%।
- ফাইবার: প্রায় 2.6 গ্রাম।
- ফোলেট (ভিটামিন বি৯): প্রয়োজনীয় দৈনিক ফোলেটের প্রায় 18%।
উপকারিতা:
1. অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফাইটোকেমিক্যালস:
আমে বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যেমন বেটা-ক্যারোটিন, কুইরসেটিন, এবং অ্যাস্ট্রাগ্যালিন, যা শরীরের ফ্রি র্যাডিকাল থেকে রক্ষা করে এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
2. হজমে সহায়ক:
আমের মধ্যে উপস্থিত এনজাইম যেমন অ্যামাইলেজ, হজম প্রক্রিয়া সহজ করতে সহায়ক। এটি কার্বোহাইড্রেট ভেঙ্গে সহজ শর্করায় রূপান্তর করে, যা দ্রুত হজম হয়।
3. হৃদরোগ প্রতিরোধে:
আমের পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক।
4. ত্বক ও চুলের যত্ন:
আমের ভিটামিন সি এবং এ ত্বক ও চুলের জন্য অত্যন্ত উপকারী। ভিটামিন সি কোলাজেন উৎপাদন বাড়িয়ে ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা রক্ষা করে এবং ভিটামিন এ চুলের বৃদ্ধিতে সহায়ক।
5. ওজন নিয়ন্ত্রণে:
আমে ক্যালোরি কম এবং ফাইবার বেশি, যা দীর্ঘক্ষণ ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং মেটাবলিজম উন্নত করে।
6. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি:
আমের উচ্চ ভিটামিন সি এবং এ-এর উপস্থিতি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। ভিটামিন সি শ্বেত রক্তকণিকার উৎপাদন বাড়িয়ে সংক্রমণ প্রতিরোধ করে এবং ভিটামিন এ শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে।
7. দৃষ্টিশক্তির উন্নতি :
আমের মধ্যে থাকা বেটা-ক্যারোটিন ভিটামিন এ-তে পরিণত হয়, যা দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে সাহায্য করে এবং রাতকানা প্রতিরোধ করে।
8. ক্যান্সার প্রতিরোধ:
আমের মধ্যে থাকা পলিফেনলস ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক, বিশেষ করে কোলন এবং স্তন ক্যান্সার।আমের এই অসাধারণ পুষ্টিগুণ এবং স্বাস্থ্যগত উপকারিতা নিশ্চিত করে যে, এটি শুধুমাত্র স্বাদে নয়, স্বাস্থ্যে উপকারী একটি ফল। তাই, নিয়মিত খাদ্যতালিকায় আম অন্তর্ভুক্ত করে সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করা সম্ভব।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url